ব্যায়াম করার উপকারীতা

ব্যায়াম করার উপকারীতা- শারীরিক ব্যায়াম বা শরীরচর্চা হল যেকোন শারীরিক কার্যক্রম যা শারীরিক সুস্থতা রক্ষা বা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বিভিন্ন কারণে ব্যায়াম করা হয়, যেমন- মাংসপেশী ও সংবহন তন্ত্র সবল করা, ক্রীড়া-নৈপুন্য বৃদ্ধি করা, শারীরিক ওজন হ্রাস করা বা রক্ষা করা কিংবা শুধু উপভোগ করা। নিয়মিত ব্যায়াম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পুনরুদ্ধার হতে সাহায্য করে।  তাহলে এটা জানাও জরুরী যে, কী কী কারণে ব্যায়াম এত গুরুত্বপূর্ণ । তো চলুন শুরু করা যাক।

ব্যায়াম করার উপকারিতা 

রোগ প্রতিরোধ করে

রোগ মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। এমন কোন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব, যিনি কোন প্রকার রোগে ভোগেন নি। মানুষ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রচেষ্টা হচ্ছে, রোগমুক্ত থাকা। আর এই রোগ প্রতিরোধেই সাহায্য করে ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম খুব প্রয়োজনীয় শারীরিক ফিটনেস ও ভালো স্বাস্থ্যের জন্য। এটা বড় বড় রোগ যেমন হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস ও অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ব্যায়াম আপনার চেহারার আবেদন বাড়াতে এবং দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে সাহায্য করবে। তাই সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। (ব্যায়াম করার উপকারীতা)

সহনশক্তি বাড়ায়

এটি মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি যখন ব্যায়াম করেন, তখন আপনার শরীর শক্তি ব্যয় করে। আপনার শরীর যদি স্থূল, চর্বিযুক্ত ও কায়িক পরিশ্রমহীন হয়ে থাকে, তাহলে আপনি অল্প শারীরিক শ্রমেই অধিক ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। আপনি যখন নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, তখন কম ক্লান্তিতেই অধিক পরিমাণে কাজ করতে পারবেন। ভয় পাওয়া কঠিন কাজটিও দেখবেন, এক তুড়িতেই করতে পারছেন।

আরও পড়ুনঃ

ব্যায়াম মনকে চাঙ্গা করে

ব্যায়ামের মাধ্যমে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ মস্তিষ্ক হতে নির্গত হয়। এসব রাসায়নিক উপাদান চিত্ত প্রফুল্ল করে এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি চেহারায় লাবণ্য ও ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। যিনি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাকে বিষন্নতা কিংবা হতাশা সহজে হ্রাস করতে পারে না।

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে

সুস্থ থাকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল শরীরের বাড়তি ওজন ও মেদ ঝরিয়ে ফেলা। কিন্তু বাড়তি ওজন কমাতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। শারীরিক চর্চা করলে ক্যালোরি খরচ হয়। এভাবে আমরা যতই ব্যায়াম করবো ততই আমাদের ক্যালোরি খরচ হবে এবং যার ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। (ব্যায়াম করার উপকারীতা)

শরীরের নমনীয়তা বাড়ায়

আমাদের শরীরকে ফ্লেক্সিবল (Flexible) করতে ব্যায়ামের কোন জুড়ি নেই। আমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও মাংসপেশী নমনীয় হওয়াটা জরুরী। তাহলে শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ছোটখাটো আঘাতে মচকে বা ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও ভালো থাকুন।

শরীরকে করে শক্তিশালী

মাংসপেশীর গাঁথুনি যার যত ভালো, সে ততো বেশি শক্তিশালী। ব্যায়াম প্রতিটি পেশীকে আলাদা আলাদা ভাবে গড়ে তোলে। পুরো ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে আপনার উপর। কারণ আপনি ঠিক যেভাবে আপানার পেশীকে শক্তিশালী করতে চান, সেভাবেই করতে পারবেন।

কর্মস্পৃহা বাড়ায়

আপনি যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন, তাহলে কাজের প্রতি আপনার অনীহা তৈরি হবেই। ব্যায়ামের ফলে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে অতিরিক্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবারাহ হয়। এর ফলে সমস্ত শরীরে একটি সুস্থ প্রাণস্পন্দন ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। এটা আমাদের কর্মস্পৃহা বাড়ায়।

যৌন জীবনের জন্য উপকারী

দাম্পত্য জীবনে যৌন সুখ পুরো সংসার জীবনেই প্রভাব পড়ে। যাদের যৌন জীবনে জড়তা কিংবা অনাগ্রহ এসেছে, তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত ব্যায়াম করলে যৌনস্পৃহা বাড়ে, যৌন মিলনের স্থায়ীত্বকাল বৃদ্ধি পায় এবং দাম্পত্য জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।

সুনিদ্রায় সহায়ক

আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে, আপনি যখন ক্লান্ত থাকেন, তখন খুব গাঢ় ও গভীর ঘুম হয়। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। ব্যায়াম অনিদ্রা দূর করে, অতি নিদ্রা হ্রাস করে। অবশ্য একেবারে ঘুমানোর আগে ব্যায়াম করা উচিত নয়। কারণ ব্যায়ামের পরে মানসিক চাঙা ভাবের কারণে ঘুম আসা বিলম্বিত হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

শেষ কথা

সার্বিক জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যায়ামের রয়েছে অপরিসীম ভূমিকা। ব্যায়াম করার ফলে মন ভালো থাকে, শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে ইত্যাদি। আমাদের সকলেরই নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *