সবার আমি ছাত্র কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর: সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য জন্মগতভাবেই মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। মানবিক ও নৈতিক শিক্ষালাভের জন্য মানুষের সবচেয়ে বড় সহায়ক হলো প্রকৃতি। প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান আমাদের শিক্ষা দেয়। মাথার উপরের অসীম আকাশ আমাদের উদারতা শেখায়।
আমাদের কর্মপ্রেরণার বড় উৎস নিরন্তর বায়ুপ্রবাহ। পাহাড়ের উচ্চতা আমাদের সুমহান হতে শেখায়। শেখায় ধৈর্য ও যৌনতা। আত্মত্যাগের আরেকটি বড় উদাহরণ সূর্য। সূর্য নিজে জ্বলে তার আলোয় সবাইকে আলোকিত করে। সাগর তার বুকে যুগ যুগ ধরে বিশাল রত্নভাণ্ডার সংরক্ষণ করে নীরবে মানবকল্যাণ করে। নদী আমাদের গতিশীল হওয়ার শিক্ষা দেয়।
সবার আমি ছাত্র কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ১। আকাশ আমাদের কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর: আকাশ তার অসীমতা দিয়ে উদার হতে শিক্ষা দেয়। ‘সবার আমি ছাত্র’ কবিতায় কবি সুনির্মল বসু বলেছেন, আকাশ তাঁকে উদার হতে শেখায়। মানুষ মূলত প্রকৃতি থেকেই শিক্ষাগ্রহণ করে। প্রকৃতিই মানুষের প্রকৃত শিক্ষক। আকাশ প্রকৃতিরই উপাদান। মাথার উপর যে আকাশ তার বিশালতা অনেক। অসীম আকাশ মানুষকে তার মতোই অসীম ও উদার হতে শেখায়। তাই উদারতার শিক্ষা মানুষ আকাশের কাছ থেকেই পায়।
প্রশ্ন ২। খোলা মাঠের উপদেশ কবি শুনতে চান কেন?
উত্তর: কবি খোলা মাঠের উপদেশ শুনতে চান দিল খোলা হওয়ার জন্য। কবি খোলা মাঠের মতো দিল-খোলা অর্থাৎ মনখোলা হতে সবাইকে উপদেশ দেন। প্রকৃতির খোলা মাঠ এ পৃথিবীর এক অনন্য অনুষঙ্গ। খোলা মাঠের উদারতা মানুষকে মনখোলা বা মুক্তমনা হওয়ার উপদেশ দেয়। তাই কবি খোলা মাঠের কাছ থেকে দিল-খোলা হওয়ার শিক্ষা পেতে চান।
আরও পড়ুনঃ
প্রশ্ন ৩। মানবিক ও নৈতিক শিক্ষালাভের সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি প্রকৃতি কেন?
উত্তর: কবি প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে যে নতুন নতুন জিনিস শিখছেন উক্তিটির মধ্য দিয়ে সেই কথাই বলেছেন। কবি এই পৃথিবীর প্রকৃতিকে নিজের শিক্ষক মনে করেন। আর নিজেকে মনে করেন সমস্ত বিশ্ব পাঠশালার ছাত্র। কারণ কবি জানেন মানুষ মানবিকতা ও নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করে প্রকৃতি থেকেই। প্রকৃতিই শিক্ষার সবচেয়ে বড় সহায়ক। তাই কবি এই প্রকৃতি থেকেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জিনিস শেখার কথা বলেছেন।
প্রশ্ন ৪। বায়ু কীভাবে করিকে কর্মী হওয়ার মন্ত্র দেয়— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বায়ু তার গতি ও কাজের চলমানতার মধ্য দিয়ে কবিকে কর্মী হওয়ার মন্ত্র দেয়। বায়ু বা বাতাস প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বায়ু গতিশীল। বায়ু সর্বত্র প্রবাহিত হয়। কখনো থেমে থাকে না। সব সময় বায়ু তার কাজ করে। সব সময় কাজ করার মন্ত্রণা বা উৎসাহ কবি বায়ুর কাছ থেকে পান। বায়ু কর্মপ্রেরণার একটি বড় উৎস। কবি তাই বায়ুর কাছে কর্মী হওয়ার মন্ত্র গান।
প্রশ্ন ৫। পাহাড় কবিকে কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর: পাহাড় কবিকে মৌন ও মহান হতে শেখায়। সমাজে অনেক মানুষ আছে যারা একটু কাজ করে আর আরেকটু বাড়িয়ে বলে। তবে পাহাড় এই পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করে, কিন্তু কখনো বড় কথা বলে নিজেকে জাহির করে না। কবি নীরবে মহান ও উদার কাজ করার উৎসাহ পাহাড়ের কাছ থেকে পান। এ ছাড়া কবি মাথা উঁচু করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্নও পাহাড়কে দেখে দেখেন। ধৈর্যে-শ্বৈর্যে কবি পাহাড়ের মতো নীরব ও গুণে-কর্মে পাহাড়ের মতো- মহান হতে চান। সেই শিক্ষা তিনি পাহাড়ের কাছ থেকে অর্জন করেন।
প্রশ্ন ৬। কবি নদীর কাছ থেকে চলার শিক্ষা পান কীভাবে?
উত্তর: কবি নদীর গতিশীল চলার মধ্য দিয়ে আপন বেগে চলার শিক্ষা পান। নদীর কাছ থেকে কবি গতিশীল থাকার শিক্ষা পান। আমরা জানি নদী নিজ গতিতে লক্ষ্যের দিকে ছুটে চলে। কোনো বাধাই তার পথ রোধ করতে পারে না। পাহাড়-পর্বত ডিঙ্গিয়ে নদী ছুটে চলে অবিরাম। কবি তাই নদীর কাছ থেকে গতিশীল থাকার শিক্ষা নিয়ে আপন বেগে চলতে চান।
প্রশ্ন ৭। আপন কাজে কঠোর হওয়া বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: আপন কাজে কঠোর হওয়া বলতে কবি দায়িত্ব-কর্তব্যে দৃঢ় থাকার কথা বলেছেন। কবি আপন কাজে অর্থাৎ দায়িত্ব ও কর্তব্যে কঠোর হতে চান। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের সব কাজ পালন করতে চান। নিজের কাজের সঙ্গে তিনি কোনো রকম আপস করতে চান না। এসব কাজে কঠোর হওয়ার শিক্ষা তিনি পাষাণ অর্থাৎ পাথরের কাছে পান।
উপরে সবার আমি ছাত্র কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। কেউ বুঝতে না পারলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।